অফিসে বসেও কীভাবে করবেন বেসিক স্কিন কেয়ার?

অফিসে বসেও কীভাবে করবেন বেসিক স্কিন কেয়ার

সময়ের সাথে সাথে আমাদের জীবনযাপনের ধরনও বদলে যাচ্ছে। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও পিছিয়ে নেই আজকাল। ঘর সামলানোর পাশাপাশি চাকরি অফিস সবকিছুই একই গতিতে করছে। আমরা আমাদের বেশিরভাগ সময় দিনরাত ত্বকের যত্ন নিয়ে কথা বলে কাটাই। কিন্তু আমাদের যাদের দিনের বেশির ভাগ সময় বাইরে বা অফিসে কাটাতে হয় তারা কি আমাদের স্কিনের কেয়ার প্রপারলি করি? আপনি কি কোথাও শুনেছেন যে অফিসে কাজ করার সময় স্কিন কেয়ার করা যায়?

আপনি অফিসে কাজ করলেও কিছুটা সময় বের করে আপনার ত্বকের বা স্কিনের বেসিক যত্ন নিতে পারেন। বাইরে যাওয়ার আগে আমরা একটু মেকআপ করে বের হই। কিন্তু সারাদিন মুখে এই মেকআপ রাখা খুব একটা ভালো জিনিস নয়। আজকের পোস্টটি মূলত তাদের জন্য যারা মনে করেন, “সারাদিন অফিসে আছি, কিভাবে স্কিন কেয়ার করবো?” তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে অফিস থেকে ঝটপট বেসিক স্কিন কেয়ার করা যায়।

দিনে প্রপার স্কিন কেয়ারের ধাপ গুলো কী কী?

অফিসে ইনস্ট্যান্ট বেসিক স্কিন কেয়ার রুটিন কেমন হবে তা জানার আগে, আসুন জেনে নেওয়া যাক ডে স্কিন কেয়ারে প্রাথমিক ত্বকের যত্নের রুটিনের সঠিক পদক্ষেপগুলি কী কী। কারণ অফিসে ইনস্ট্যান্ট বেসিক স্কিন কেয়ারের আগে প্রাথমিক ত্বকের যত্ন সম্পর্কে জানা জরুরি।

দিনের প্রাথমিক স্কিন কেয়ার রুটিন

(১) ক্লিনজিং (স্কিনে মেকআপ সংক্রান্ত পণ্য ব্যবহার করলে ডাবল ক্লিনজিং মাস্ট)

(২) এক্সফোলিয়েশন (সপ্তাহে কমপক্ষে 2 থেকে 3 বার।

(৪) টোনিং (দিন-রাত পরিষ্কার করার পর মাস্ট)

(৫) ময়শ্চারাইজিং।

(৬) সান প্রোটেকশন (দিনের সময় মাস্ট পুনরায় প্রয়োগ)।

(৭) ফেস মাস্ক বা প্যাক (সাপ্তাহিক স্কিন কেয়ার রুটিনে ফেস মাস্ক বা প্যাক রাখুন)।

(৮) সিরাম অ্যাপ্লাই (বিশ বছর বয়সের পরে সমস্যা অনুযায়ী সিরাম প্রয়োগ করা ভাল)।

অফিসে স্কিন কেয়ারের স্টেপ গুলো তাহলে কেমন হবে?

সকালে ঘুম থেকে উঠলে প্রথমে আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী একটি ভালো ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন। ফলে আপনার মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার হবে। এরপরে, ময়েশ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিন লাগান। এছাড়াও, যারা মুখের মেকআপ ব্যবহার করতে চান, তারা এই সময়ে এটি ব্যবহার করতে পারেন। তবে, অফিসে আসার পর পর স্কিন কেয়ারের তেমন একটা প্রয়োজন না হলেও একটা নির্দিষ্ট সময় পর ফেইস ডিহাইড্রেটেড ফিল হয়। এবং সানস্ক্রিনও রি-অ্যাপ্লাই করার সময় হয়ে যায়। সুতরাং, প্রাথমিক ত্বকের যত্নের জন্য সেরা সময় হল দুপুরের খাবারের পর। অনেকেই হয়তো ভাবছেন, কেন আবার সানস্ক্রিন লাগাবেন? হ্যাঁ! অবশ্যই। চলুন আগে খুঁজে বের করা যাক।

দিনের বেলা সানস্ক্রিন রি-অ্যাপ্লাই করা কি মাস্ট?

খেয়াল করে দেখবেন সানস্ক্রিনে এসপিএফ (SPF) কথাটি উল্লেখ করা থাকে।  কারণ, এসপিএফ (SPF) মানে হলো- সান প্রটেকশান ফ্যাক্টর (Sun Protection Factor)। এবং এই এসপিএফ (SPF) এর উপরেই নির্ভর করে আপনার সানস্ক্রিন সান ড্যামেজ থেকে আপনার স্কিনকে কত সময়ের জন্যে সুরক্ষা দিতে পারবে।যখন কেউ SPF ১৫ এর একটি সানস্ক্রিন ব্যবহার করে সেক্ষত্রে, তখন সে SPF ১৫ কে ১০ দ্বারা গুণ করবে। গুন করলে যতমিনিট পাওয়া যাবে, সে ততক্ষন পর্যন্ত সূর্যরশ্নি থেকে সুরক্ষিত থাকবে। ফলাফল ১৫০ মিনিটের মধ্যে আসে। তার মানে আপনি ২ ঘন্টা ৩০ মিনিটের জন্য নিরাপদ।

ঠিক তেমনি, আপনি যে SPF ব্যবহার করছেন তাকে ১০ দ্বারা গুণ করলে আপনি কতক্ষণ UVB সুর্যরশ্নি থেকে সুরক্ষিত থাকবেন তা পাবেন। মূলত, এই কারণেই অনেকেই সানস্ক্রিন বেছে নেওয়ার সময় বেশি এসপিএফ যুক্ত সানস্ক্রিন পছন্দ করেন। তাই, বাইরে বের হলে এসপিএফ যুক্ত সানস্ক্রিন বেশি ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। যাইহোক, এবার ফিরে যাব অফিসে বেসিক স্কিন কেয়ারের ধাপ গুলোতে। এর জন্যে জাস্ট কয়েকটি প্রোডাক্ট ব্যাগে রাখলেই যথেষ্ট। যেমনঃ

  • স্কিনের ধরণ অনুযায়ী একটি ফেইসওয়াশ
  • ময়েশ্চারাইজার
  • সানস্ক্রিন
  • লিপবাম

(১) লাঞ্চের পর ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখটা ভালভাবে ক্লিন করে নিন

আপনি যদি বাইরে বেরোনোর সময় SPF ৩০ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন, তাহলে অনুমান করা হয় যে এটির ত্বক রক্ষা করার ক্ষমতা ৫ ঘন্টা পরে কমে যাবে। তাই ৫ ঘণ্টা পর আবার সানস্ক্রিন লাগান। কিন্তু সানস্ক্রিন পুনরায় লাগানোর আগে অবশ্যই ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। কারণ, এতে মুখ পুনরায় স্কিন কেয়ারের জন্যে রেডি হবে। তাছাড়া আপনি আপনাকে রিকোমেন্ড করবো যে Fruit Of The Wokali Sun Screen Cream ব্যবহার করার জন্য। কারন, এই সানস্ক্রিনে SPF/UVB ক্ষমতা ৯০+ অর্থাৎ, বুঝতেই পারছেন এটি আপনাকে একদম লম্বা সময় ধরে সান প্রোটেকশন দিবে।

(২) স্কিনকে হাইড্রেটেড রাখতে ময়েশ্চারাইজার মাস্ট

ময়েশ্চারাইজারের কাজ কী? ময়েশ্চারাইজারের প্রথম কাজ হল ত্বক শুষ্ক হলে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করা। এবং ত্বক হাইড্রেটেড রাখে। তাই ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালো করে পরিষ্কার করার পর সঙ্গে সঙ্গে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। অর্থাৎ সব ধরনের ত্বকের জন্যই ময়েশ্চারাইজারের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। তবে শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। ময়েশ্চারাইজার আমাদের ত্বকের বাইরের দিকে একটি স্তর তৈরি করে। বাইরের ক্ষতিকর জীবাণু ও ধুলাবালি সহজে ত্বকের ক্ষতি করতে পারে না। এই সব কারণে, অফিসে প্রাথমিক ত্বকের যত্নে ময়েশ্চারাইজার রাখা আবশ্যক।

এখন আপনার মনে অবশ্যই প্রশন জাগতে পারে যে আপু আমি কোন ময়েশ্চারাইজার ক্রিমটি ব্যবহার করবো? সেক্ষেত্রে আমি আপনাকে সাজেস্ট করবো Nature Republic Soothing & Moisture 92% Aloe Vera Gel ব্যবহার করার জন্য। কারন, এই জেলে রয়েছে ভিটামিন ই এবং ভিটামিন সি যার ফলে এটি আপনার স্কিনকে ন্যাচারেলি করে তুলবে। তাছাড়া এতে কোনো প্রকার প্যারাবেন এবং ক্যামিকেল নেই। যার ফলে আপনার ত্বককে কোনো প্রকার ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে না।

(৩) দিনের বেলা সানস্ক্রিন রি-অ্যাপ্লাই করতে ভুলবেন না

আমি আগেই বলেছি কেন পুনরায় সানস্ক্রিন লাগানো জরুরি। অফিসে থাকলেও সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার পরপরই ত্বকের ধরন অনুযায়ী মুখে সানস্ক্রিন লাগান। অনেকেই হয়তো বলবেন, আমি অফিসে থাকি! বাহিরে আলো দেখি না! অফিসে কি আবার সানস্ক্রিন লাগাতে হবে?

হ্যাঁ, মাস্ট আপনাকে ব্যবহার করতেই হবে। দিনের বেলায়, আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, সূর্যের আলো আপনাকে কোনো না কোনোভাবে স্পর্শ করছে। তাই আপনি দিনের বেলায় বাইরে থাকুন বা বাড়ির ভিতরে বা অফিসে, আপনাকে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।

(৪) ঠোঁটকে ইনস্ট্যান্ট ময়েশ্চারাইজড এবং সফট করতে লিপবাম

অফিসে কমবেশি আমরা সবাই ঠোঁটে কিছু না কিছু লাগাই। তাই না? মুখে কিছু ব্যবহার না করলেও লিপস্টিক দেওয়া হয়। সারাক্ষণ ঠোঁটে লিপস্টিক লাগিয়ে রাখার ফলে আবার লিপস্টিক ফাটলে ঠোঁট ফাটল। তাই মুখ পরিষ্কার করার পর ঠোঁটকে ময়েশ্চারাইজড ও নরম রাখতে লিপবাম লাগান। তারপর আপনি চাইলে আবারও লিপস্টিক লাগাতে পারেন।

হালকা মেকআপ ইফেক্ট পেতে বিবি ক্রিম এবং বিবি পাউডার

এছাড়াও, যারা মুখ পরিষ্কার করার পর একটু হালকা মেকআপ লুক পছন্দ করেন, তারা সানস্ক্রিন লাগানোর পর হালকা ওজনের ফাউন্ডেশন বা বিবি ক্রিম লাগাতে পারেন। এছাড়াও, যদি অয়েলি স্কিন হয় এবং আপনি হালকা ম্যাট ফিনিশ চান তবে আপনি এটি বিবি পাউডার দিয়ে সেট করতে পারেন।

দেখলেনতো! অফিসে বেসিক স্কিন কেয়ারের জন্যে তেমন আহামরি কোন কিছুরই কিন্তু প্রয়োজন হয়না। এছাড়াও, খুব কম সময়েই হয়ে যায় ত্বকের যত্ন। “স্কিন কেয়ার” শব্দটি ভারী শোনাচ্ছে, তবে এটি এতটা কঠিন নয়। ত্বক নিয়ে আমাদের অভিযোগের শেষ নেই! তাই না? “সময় নেই, কবে আবার ত্বকের যত্ন করব?” এটি একটি সাধারণ অভিযোগ। আশা করি, আজকের আর্টিকেলটি অন্তত এই অভিযোগগুলির কিছু সমাধান করতে সক্ষম হবে। আমরা অনেকেই ব্যস্ততার অজুহাতে নিজের যত্ন নেই না। কিন্তু, আপনার ত্বককে সুন্দর রাখতে এবং আপনার আত্মবিশ্বাসের মাত্রা বাড়াতে আপনাকে সচেতন হতে হবে, তাই না? তাহলে অফিসে বসেও হোক বেসিক স্কিন কেয়ার আর থাকুন লাবণ্যময় প্রতিদিন।

মেকআপ, স্কিন কেয়ার ও হেয়ার কেয়ার রিলেটেড অরেজিনাল 100% অথেনটিক যেকোনো প্রোডাক্ট কিনতে আজই ভিজিট করুন আপনাদের সকলের প্রিয় সাজকন্যা.কম – এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Main Menu