পৃথিবীতে খুব কম মানুষই আছে যাদের চুল পড়া নিয়ে টেনশন নেই, তাই না? আসলে এটা ছেলে-মেয়ে সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, কিন্তু মেয়েদের চুল নিয়ে একটু বেশি টান থাকে। চুলের পরিচর্যার পরও চুল পড়া ও চুলের রুক্ষতা কোনোভাবেই কমে না। তাহলে সমস্যা কোথায়? চুলের যত্নে কিছু সাধারণ ভুল আমরা রোজই করে যাচ্ছি, যার কারণে চুল প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই অভ্যাসগুলো অজান্তেই আমাদের চুলের ক্ষতি করছে। চুলের যত্নের ভুল নিয়ে আজকের ফিচারটি দেখে নিন।
চুলের যত্নে আপনিও কোনো ভুল করছেন না তো?
প্রথমে একটা ছোট উদাহরণ দিই, আশা করি বুঝতে বিষয়টি বুঝতে আপনার জন্য সহজ হবে। ধরুন দুই জনকে দুটি গাছ দেওয়া হলো, দুজনেই খুব যত্নশীল। বাট এক গাছে প্রচুর ফুল, কিন্তু অন্য গাছে ফুল নেই। গাছে পানি দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তারা দুজনেই হ্যাঁ বলেন। কিন্তু এই পানি দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুটি গাছের মধ্যে এত পার্থক্য! গাছে পানি দেওয়া দরকার, তবে তা পরিমিতভাবে এবং নির্দিষ্ট সময়ে। তবেই গাছে ফুল ফুটবে! দেখুন ব্যাপারটা ছোট। কিন্তু সঠিক নিয়ম না মেনে ভুল সময়ে অতিরিক্ত পানি দিতে গিয়ে কারো গাছের শিকড় পচে যাচ্ছে। আর পরিমিত পরিচর্যার কারণে অন্যের গাছে এত ফুল।
আমাদের চুলের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। ভুল এবং অতিরিক্ত যত্ন কিন্তু ক্ষতির কারণ। মজবুত ও স্বাস্থ্যকর চুল পেতে হলে আগে এই ভুলগুলো সংশোধন করতে হবে। চলুন দেখে নেওয়া যাক এই মুহূর্তে চুলের যত্নে কিছু সাধারণ ভুল।
Shop at Saajkonna.com
-
1,250.00৳
1,450.00৳ -
1,950.00৳
2,200.00৳ -
1,250.00৳
1,400.00৳ -
1,950.00৳
2,200.00৳
হেয়ার কেয়ারের খুবই কমন কিছ ভুলঃ
১. রেগুলার হার্শ শ্যাম্পু ইউজ করা
যাদের মাথার ত্বক তৈলাক্ত, তারা প্রতিদিন শ্যাম্পু করতে দেখা যায়। আপনি যখন বাইরে যান, আপনার চুল নোংরা হয়ে যায় এবং আপনার মাথার ত্বক ঘামে; তারপর নিয়মিত শ্যাম্পু করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে মাইল্ড শ্যাম্পু বা সালফেট, প্যারাবেন মুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করা নিরাপদ। হার্শ শ্যাম্পু ব্যবহার করে কালার-ট্রিট করা চুল খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তাই চুলের ধরন অনুযায়ী উপযুক্ত শ্যাম্পু বেছে নিন।
আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যায় এক সপ্তাহ লেগে গেলেও চুলে শ্যাম্পু করে না! দীর্ঘদিন ধোয়া না হলে বাইরের ধুলোবালির সঙ্গে চুলের প্রাকৃতিক সিবাম মিশে মাথার ত্বকে একটি পুরু স্তর তৈরি হয়। ফলে চুলের গোড়া নরম হয়, সেই সঙ্গে খুশকির সমস্যাও দেখা দেয়।
২. চুলের গোড়ায় কন্ডিশনার লাগানো
চুলের গোড়ায় কন্ডিশনার লাগালে চুল পড়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে। কখনই সরাসরি মাথার ত্বকে কন্ডিশনার লাগাবেন না। শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধোয়ার পর ভেজা অবস্থায় চুলের মাঝ থেকে শেষ পর্যন্ত কন্ডিশনার লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন।
৩. কিছুক্ষণ পর পর চুল আঁচড়ানো
প্রায়ই শুনি “চুল আঁচড়াতে হবে বারবার, না হলে চুলে জট লেগে যাবে” তবে বেশি চুল আঁচড়ালে চুল ভেঙে যায় এবং চুলের কিউটিকলের ক্ষতি হয়। ভেজা অবস্থায় চুল আঁচড়ানো ঠিক নয়। ভেজা চুল সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় থাকে। তাই একটু সময় নিয়ে চুল হালকা করে শুকিয়ে আসলে চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে নিন। মনে রাখবেন একটি ভালো ব্রাশ বা চিরুনি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই সঠিক চিরুনি নির্বাচন করুন।
চুল আঁচড়ানোর সঠিক নিয়ম
- শুকনো চুল আঁচড়ানোর সময় সেকশন করে করে হেয়ার ব্রাশিং করুন, মাঝ বরাবর স্টার্ট করে চুলের শেষ পর্যন্ত জেন্টলি মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করে আঁচড়ান।
- কাঠের চিরুনি বেশ ভালো বিকল্প। তাই কাঠের চিরুনি ব্যবহার করুন।
- চাপ দিয়ে খুব জোরে ব্রাশ করলে চুল পড়া আরও বেড়ে যেতে পারে। অনেকে মনে করেন শক্ত চিরুনি করলে চুলের ফলিকলে রক্ত চলাচল ভালো হয়, ফলে চুল ভালো থাকে। তবে আপনার খুব বেশি চাপ দেওয়া উচিত নয়, কারণ এটি চুলের ফলিকলগুলিকে ক্ষতি করতে পারে।
Shop at Saajkonna.com
-
1,250.00৳
1,450.00৳ -
600.00৳
750.00৳ -
380.00৳
500.00৳ -
1,950.00৳
2,200.00৳
৪. চুল শুকানোর জন্য তোয়ালে দিয়ে চুল ঝাড়া
এরকম একটা দৃশ্য তো কম বেশি সবারই মনে পড়ে! আগের দিনে মা-চাচিরা গামছা দিয়ে জোরে জোরে চুলে ঝাড়া দিয়ে চুল মুছতো, তাই না? ছোটবেলায় কারও কাছে চুল মুছতে দিলে টাওয়াল দিয়ে খুব প্রেশার দিয়ে মাথা মুছে দিতো আর বলতো ‘পানি থাকলে ঠান্ডা লাগবে’। এটা আমার নিজের অভিজ্ঞতা! বাট এখন আমরা চুলের যত্ন সম্পর্কে জানি, তাই বুঝলাম পদ্ধতিটা কতটা ভুল ছিল। ভেজা চুল নরম সুতির কাপড় বা নরম তোয়ালে দিয়ে আলতো করে মুছতে হবে। আর ভেজা চুলে ঘুমানোর অভ্যাসও চুলের ক্ষতি করে, তাই আপনাকে এই যত্ন নিতে হবে।
৫. হেয়ার ড্রায়ার বা হিট স্টাইলিং টুলস রেগুলার ইউজ করা
প্রয়োজন ছাড়া নিয়মিত হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার না করাই ভালো। যখন হেয়ার ড্রায়ার ইউজ করতে হবে, নির্দিষ্ট দূরত্বে রেখে পাওয়ার কমিয়ে জেন্টলি কাজটা করুন। হেয়ার ড্রায়ার সরাসরি চুলের গোড়ায় গরম করবেন না। এছাড়া বারবার সোজা বা কুঁচকানো হলে চুলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনি যদি হিট স্টাইলিং টুল ব্যবহার করেন, তাহলে আপনাকে প্রথমে হিট প্রোটেক্টর সিরাম বা স্প্রে ব্যবহার করতে হবে। এতে চুল সুস্থ থাকবে।
৬. ময়লা স্ক্যাল্পে অয়েল ম্যাসাজ করা বা প্যাক লাগানো
আপনার স্ক্যাল্পে অলরেডি যদি ডার্ট জমেই থাকে, তাহলে তেল বা হেয়ার প্যাক লাগালে সেটা থেকে আপনি কিন্তু কোনো বেনিফিট পাবেন না! এতে চুলে তো পুষ্টিই পৌঁছাবে না, বরং হেয়ার প্যাক ধোয়ার সময় আরও বেশি চুল পড়ে যাবে! বাইরের ধুলাবালি ও বালির সঙ্গে তেল মিশে গেলে মাথার ত্বকের ছিদ্রগুলো আটকে যায়, যার ফলে চুল পড়ে। তাই ক্লিন স্ক্যাল্পে অয়েল ম্যাসাজ করুন অথবা হেয়ার প্যাক অ্যাপ্লাই করুন।
Shop at Saajkonna.com
-
1,450.00৳
1,900.00৳ -
2,250.00৳
2,400.00৳ -
1,950.00৳
2,100.00৳ -
2,250.00৳
2,400.00৳
৭. অপরিচ্ছন্ন বালিশের কভার ইউজ করা
জামাকাপড় থেকে শুরু করে আমরা প্রতিদিন আমাদের চারপাশের অনেক কিছু পরিষ্কার করি। বাট বালিশের কভারে নজর রাখবেন? তেল আঠালো ময়লা আবরণ থেকে সহজ ময়লা আপনার চুলে যায়। এটি ছত্রাক সংক্রমণ বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণ হতে পারে। তাই প্রতি সপ্তাহে বালিশের কভার পরিষ্কার করতে ভুলবেন না। আর একটা কথা, সিল্কের বালিশের কভার ব্যবহার করতে হবে যাতে ঘষে চুল ফেটে না যায়।
৮. সবসময় টাইট করে চুল বেঁধে রাখা
প্রতিদিন একই জায়গায় পাতলা ব্যান্ড দিয়ে চুল টাইট করে বেঁধে রাখলে চুলের ক্ষতি হয়, কিন্তু আমরা অনেকেই এটা জানি না। এই অভ্যাস এড়িয়ে চলুন। ঘুমানোর সময় খুব ঢিলেঢালাভাবে বেণি করা ভালো। খুব পাতলা হেয়ার ব্যান্ড ব্যবহার করলে চুল ফেটে যেতে পারে, সেদিকেও নজর রাখুন।
যেকোনো হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট ইউজ করার আগে স্টাডি করে নিন আপনার স্ক্যাল্প ও হেয়ার টাইপ কী। প্রবলেম আইডেন্টিফাই করে যখন ঠিকঠাক প্রোডাক্ট সিলেক্ট করবেন, সেটাই আপনার চুলের জন্য বেনিফিসিয়াল হবে। সুন্দর চুল পেতে হেলদি ডায়েট চার্ট মেনটেইন করতে হবে, ঠিক টাইমে ঘুমাতে হবে। চুলের যত্ন নিন একটু নিয়ম মেনে, আশা করি হেয়ার প্রবলেমগুলো অনেকটাই কমে আসবে। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন সাজকন্যা.কম থেকে।